Header Ads

Header ADS

আমার ছাদের বাগান (পর্ব - ৬)





আমার ছাদের বাগানের আগের পর্বে শিম গাছের মাচা নিয়ে লিখেছিলাম। তা প্রায় ১৬-১৭ দিন আগের কথা। এতো দিনে গাছগুলো বড় হয়েছে যথেষ্ট। ফুল দিয়েছে, একদিন শিমের তরকারিও খেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। তাই ভাবলাম এই পর্বে গাছগুলোর বর্তমান অবস্থা এবং মাচার সম্পর্কে কিছু তথ্য দেয়া যাক। আমার মত যারা ছাদবাগানি আছেন তারা প্রায় সবাই মাচা তৈরি করে শাক সবজি বুনতে চান। কিন্তু হয়ে উঠে না কারন সহজ পদ্ধতি সম্পর্কে অনেকেরই হয়ত ধারণা নেই। বেশিরভাগেরই ধারণা বাঁশের মাচা ছাড়া মনে হয় হয়না। আসলে কথাটা একদম ঠিক না। তাই আজকে যে বিষয়টা নিয়ে লিখলাম আমার মনে হয় তা সব ছাদবাগানিদেরই জানা থাকা দরকার। আর সাথে বলে দিব প্লাস্টিক বা পাটের বস্তায় কিভাবে গাছ লাগানো যায়।



প্রথমেই বলে নেই আমার ছাদবাগানে বর্তমানে মাচায় আছে শিম, লাউ আর বরবটি এই তিন রকমের সবজি। করল্লা আর মিষ্টি কুমড়া আগে বুনেছিলাম আর সেগুলোর ফলন ছিল ভালই। তবে করল্লার বীজ তা সম্ভবত ভাল মানের পাইনি তাই করল্লার ফলন খুব একটা আশানুরূপ হয়নি। যাই হোক প্রথমেই বলে নেই বস্তায় মাটি তৈরির পদ্ধতি। একদম সহজ কাজ, মাটি একটু ঝুরো করে নিতে হবে কারন মাটি ঢিলা আকারে থাকলে পানি নিষ্কাশনে একটু সমস্যা হয়। এই ঝুরো মাটিতে পরিমান মত গোবর বা কমপোস্ট মিশিয়ে নিন। এখানে আমার পরামর্শ হোল গোবরটা পুরোপুরি শুকিয়ে নিতে হবে। আর গোবর না পেলে বাজার থেকে কমপোস্ট কিনে নিতে পারেন। আমি অবশ্য কমপোস্ট এবং কেঁচো সার দুটোই ব্যাবহার করেছি। সাধারন কমপোস্ট এর দাম ৪০-৫০ টাকা কেজি আর কেঁচো সার আরেকটু কম ৩০-৩৫ টাকা। পরিমান একই ব্যাবহার করবেন। ৫০ কেজি বস্তার অর্ধেকটা মাটি দিয়ে ভরে নিলে তাতে ৪-৫ মুঠো কমপোস্ট দিলেই যথেষ্ট। আর বস্তার নিচে ছিদ্র করে দিবেন এবং অবশ্যই সুরকি এবং শুকনো ঘাসপাতা দিয়ে নিচে একটা আস্তর করে দিবেন। কেঁচো সার নিয়ে আলাদা একটা লেখা দেয়ার ইচ্ছা আছে। আমি নিজে বানানোর একটা প্রকল্প হাতে নিয়েছি। প্রকল্প বলাতে আবার ভেবে বসবেন না যে বিশাল কোন ব্যাপার। আসলে একটি ২০ লিটারের প্লাস্টিকের বালতিতে কেঁচো সার বানানোর চেষ্টা করছি।



এবার মাচার প্রসঙ্গে আসি, অনেকেই আমাকে বলেছে মাচা কিভাবে বানাবো? বাঁশ ছাড়া কি মাচা সম্ভব? আমি আসলে বলতে চাই সম্ভব, তবে একটা কথা আছে লাউ বা কুমড়ার ক্ষেত্রে এই মাচা গুলো একটু সমস্যা করতে পারে, তাই লাউ বা কুমড়া বড় হয়ে গেলে আপনাকে একটু সাবধান থাকতে হবে। আমার এই মাচাগুলো আমি নাইলনের দড়ি দিয়ে বানিয়েছি। আমার সৌভাগ্য যে ছাদে খুব ভাল জায়গায় বিল্ডিঙের পিলারের রড ছিল। সেগুলোকেই কাজে লাগিয়েছি। আমি কয়েকটা ছবি দিয়ে দিলাম, আপনারা দেখলেই বুঝতে পারবেন এটা বানানো কত সহজ। শিম, বরবটি, করল্লার জন্য এই মাচাগুলো খুবই কার্যকর কারন সবজির ওজন কম হয় তাই ছিঁড়ে পড়ার ভয় থাকে না। আর ভারি সবজি যেমন লাউ কুমড়ার জন্য যেটা করতে হবে, ফলের আকার বাড়ার সাথে সাথে আলাদা দড়ি দিয়ে একটু বেধে দিতে হবে মাচার সাথে। গাছ লাগানো এবং মাচা তৈরি হয়ে গেলে আর যেটা বাকি থাকে তাহলো পড়ে কি আরও সার দেয়া লাগবে  কিনা? আমি যেটা করি ৩-৪ দিন পরপর তরল জৈব সার দেই। এটা কিভাবে বানাবেন তা আমার আগের একটা পোস্টে বলে দিয়েছি। এই কয়েকটা জিনিস যদি খেয়াল রাখেন আর আপনার বীজের মান যদি ভাল হয় তাহলে ভাল ফলন হবেই ইনশাল্লাহ। সামনের আরেকটা পর্বের আগ পর্যন্ত আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি।

No comments

Theme images by RBFried. Powered by Blogger.