Header Ads

Header ADS

Interstellar - একটি অজানা এবং আবেগময় যাত্রা, যা কেবল নক্ষত্রমণ্ডলের দিকেই সম্ভব!

Interstellar কথাটির অর্থ নক্ষত্রমণ্ডলগত, সৌরজগত্-বহির্ভূত। ২০১৪ সালের এই  ছবিটির নাম শুনে আর দশটি সাধারন Sci-Fi মুভি মনে হতে পারে। কিন্তু ক্রিস্টোফার নোলানের এই মুভিটি যারা দেখেছেন তারা আমার সাথে এই বিষয়ে একমত হবেন যে, এটা মোটেও সাধারন কোন Sci-Fi মুভি না এবং নিঃসন্দেহে এই ক্যাটাগরির একটি মাস্টারপিস। একটি মুভি যে আপনার সাধারন চিন্তা চেতনাকে নাড়িয়ে দিয়ে পুরোপুরি নতুন কিছু ভাবতে বাধ্য করতে পারে তার সবচেয়ে ভাল উদাহারন হতে পারে এই মুভিটি। "Thought provoking" "Out of the box" বুঝি একেই বলে!


মধ্য একুশ শতকে ফসলের দুর্যোগ এবং ধূলি ঝড় ভয়াবহ হুমকি হিসেবে দেখা দেয় মানব সভ্যতার উপর। আমেরিকা ভিত্তিক সংগঠন নাসার কিছু বিজ্ঞানী অনেক দিন ধরে চেষ্টা করে আসছে এই হুমকির হাত থেকে মানবতাকে বাচাতে পৃথিবীর একটি বিকল্প আবাস স্থল খুজে বের করতে। এই পর্যায়ে ঘটনাক্রমে নাসার সাবেক পাইলট কুপারের সাথে দেখা হয়ে যায় নাসার উচ্চ পর্যায়ের বিজ্ঞানী প্রফেসর ব্রানড এর। কিছু ঘটনা অতিবাহিত হওয়ার পর কুপার সম্মত হয় একটি স্পেস শিপ এর নেতৃত্ব দিতে। স্পেস শিপ টির মুল উদ্দেশ্য ছিল মহাকাশে বিকল্প আবাস স্থল হিসেবে বারো টি গ্রহের সবচেয়ে সম্ভামনাময় গ্রহটিতে পৌঁছান। কিন্তু এখানে একটু  সমস্যা আছে। গ্রহটিতে পৌঁছানর জন্য সাহায্য নিতে হবে একটি ওয়ার্ম হোলের। অল্প কথায় ওয়ার্ম হোল হচ্ছে সেই বস্তু যা মহাকাশে যে কোন কিছু কে নিজের দিকে টেনে নেয় এবং এর ফলে অল্প সময়ে অকল্পনীয় দূরত্ব অতিক্রম করা যায়। যাই হোক কুপারের নেতৃত্বে স্পেস শিপ টি প্রথমে কিছুদুর ঠিক ঠাক মত গেলেও তার পর থেকেই নানাভাবে বাধাপ্রাপ্ত হতে থাকে। নতুন নতুন সমস্যার  কারনে পুরোপুরি ভেস্তে যায় তাদের পূর্ব পরিকল্পনা। তবে কুপার আর দল অভিযান টি কি শেষ করতে পেরেছিল কিনা টা জানতে আপনাকে মুভিটি দেখতে হবে।


এই পর্যন্ত পড়ে অনেকে মনে করে থাকতে পারেন এখানে নতুন কি আছে? ওই যে বললাম "ওয়ার্ম হোল"। আপনার মাথা নাড়িয়ে দেয়ার জন্য এই একটি কথাই যথেস্থ। একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে আছে এই ওয়ার্ম হোল। সাথে সাথে আপনি আরও জানতে পারবেন সত্যিকার অর্থে "সময়" কি? আরেকটি মজার বিষয় হচ্ছে এই মুভি তে যেইসব বৈজ্ঞানিক ঘটনা বা শব্দ ব্যাবহার করা হয়েছে তার সবগুলোই বিজ্ঞানসম্মত । অর্থাৎ আপনি যা দেখবেন এই মুভিতে তা কল্পনা মনে হলেও মোটেও মিথ্যা নয়! একটি ঘটনা না বলে পারছি না, কুপার রা এমন একটা গ্রহে পদার্পণ করে যেখানে এক ঘণ্টা মানে হচ্ছে পৃথিবীর হিসাবে ৭ বছর! এখনও যদি বুঝে না থাকেন তাহলে দেরি না করে মুভি টি দেখে ফেলুন।



২ ঘণ্টা ৪৯ মিনিটের এই মুভিটার বাজেট ছিল ১৬৫ মিলিওন এবং আয় করে ৬৬৭ মিলিওন। ফাটাফাটি সুপার হিট না হলেও বেশ ব্যাবসাসফল। মুভি ডাটাবেস IMDb তে মুভিটির অবস্থান ৩২। ম্যাথু ম্যাকনাহে, অ্যান হ্যাথাওয়ে, জেসিকা চ্যাস্টেইন, ম্যাকেনজি ফয় দের দুর্দান্ত অভিনয় আপনাকে তৃপ্তি দিতে বাধ্য। আর সর্বোপরি ক্রিস্টোফার নোলানের নেক্সট লেভেল পরিচালনা আপনাকে মন্ত্রমুগ্ধের মত মুভিটা শেষ পর্যন্ত দেখতে বাধ্য করবে।
একটি অসাধারণ এবং অজানা যাত্রায় সামিল হতে চাইলে আর ৩ ঘণ্টা অবসর থাকলে দেরি না করে দেখে ফেলুন Interstellar।

1 comment:

Theme images by RBFried. Powered by Blogger.